শয়তানের সন্তান PDF download সৈকত মুখোপাধ্যায়

সৈকত মুখোপাধ্যায়ের দুটি উপন্যাসের এক সংকলন। নাম "শয়তানের সন্তান"। এরমধ্যে প্রথম উপন্যাসটির নাম "পতঙ্গ সঙ্গম"। দ্বিতীয়টি উপন্যাসটির নাম পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার সময় কিছু অন্য ছিল, এই বইয়ে তার নাম "শয়তানের সন্তান"।  দ্বিতীয়টির নামেই বইয়ের নাম। আপনারা অনেকেই হয়তো জনপ্রিয় পত্রিকায় এই দুটি উপন্যাসকেই প্রাথমিক রূপে পড়ে থাকবেন। 

"পতঙ্গ সঙ্গম" থ্রিলার ঘরাণার লেখা, যদিও উৎসে রয়েছে জীবন বিজ্ঞানের এক সুদূর-কল্পনা। পরাশ্রয়ী জীবেরা যে-বিষে আশ্রয়দাতাকে ক্রীতদাস বানিয়ে ফেলে, এক নারীর শরীরে যদি সেই বিষের বীজাণু থাকত, তাহলে কী হত।

"শয়তানের সন্তান"ও একটা স্তরে অবশ্যই ফ্যানটাসি অর্থাৎ কল্পকাহিনী। শয়তানের উপাসক একদল আশ্চর্য নারী-পুরুষ, তাদের অলৌকিক উপাসনার খুটিনাটি, শয়তানের ঔরসে মানবীর গর্ভাধান এবং আজকের পৃথিবীতে সেই সন্তানের গোপন সঞ্চরণ ইত্যাদি। কিন্তু এই কাহিনীর বয়ানেই যখন মিশে যায় নাজী জার্মানির লেবেন্সবর্ন প্রোগ্রাম এবং নিহত ইহুদিদের নিলামে তোলা বাসনপত্রের কথা, তখন শয়তানের পরিচয় নিয়েই  ধন্দ তৈরি হয়। সত্যিই কি সে ততটাই কাল্পনিক?

আর শুধু দুটো কথা বলার। 
প্রথমত, কাহিনী কল্পনাশ্রয়ী হলেও দুটি উপন্যাসের কোনোটিতেই  পাত্রপাত্রী কিম্বা পটভূমিকে যাতে এতটুকু অচেনা বলে মনে না হয়, লেখক এখানে  নিরন্তর সেই চেষ্টা করে গেছেন। সুন্দরবনের বানভাসি কৃষক, শিয়ালদার কবিরাজ পরিবারের অকর্মন্য ছেলে, দমদমের কারখানার মাফিয়া লিডার, দুর্গাপুরের কোক-আভেন থানার ওসি কিম্বা গোপালমাঠের বাতিল বেশ্যা-- এরাই  এই দুই উপন্যাসের কুশীলব। তেমনি পটভূমিকায় রয়েছে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের নরকপ্রতিম স্ল্যাগব্যাঙ্ক আর এই কলকাতারই ট্যাংরা কসাইখানা। বিশুদ্ধ আঞ্চলিক উপাদান দিয়ে সার্বজনীন আতঙ্কের উপন্যাস লেখা যায় কিনা সেটা লেখকের  নিজের কাছেই ছিল একটা চ্যালেঞ্জ। 

দ্বিতীয়ত, একজন লেখক  বরাবরই যা চেয়ে থাকেন, এই দুটো উপন্যাস লেখার সময়ও লেখক চেয়েছিলেন এরা যেন পাঠককে নিবিড় পাঠের রোমাঞ্চ দিতে পারে; প্রথম থেকে শেষ অবধি যেন পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখতে পারে। লেখাগুলোকে কোন ঘরানায়, কোন জঁরে ফেলা যায় তা নিয়ে লেখক মাথা ঘামাননি। লেখকের  সেই আশা পূর্ণ হল কিনা তা বুঝতে পারা যাবে আপনারা যখন বইটা পড়ে ফিডব্যাক দেবেন তখন।



Post a Comment

0 Comments